কাগজ প্রতিবেদক
ময়মনসিংহ নগরীর পুরোহিত পাড়া এলাকায় ক্রসফায়ারে রাজন হত্যার ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাবেক ওসি আশিকুর রহমানসহ ১৭ জনের নামে মামলা করেছে নিহতের পরিবার। রবিবার (২০ অক্টোবর) বিকালে রাজনের বাবা হারুন অর রশিদ (৫৪) বাদী হয়ে ময়মনসিংহ সদর ১ নম্বর আমলি আদালতে এ মামলাটি করেন। আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রওশন জামিল ঘটনা তদন্তে কোতোয়ালি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাছিনুর রহমান মামলার বিবরনে জানান, অভিযোগ রয়েছে ২০১৮ সালের ২২ মে (মঙ্গলবার) রাত ১টার সময় ডিবির সাবেক ওসি আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নগরীর পুরোহিত পাড়ায় অভিযান চালিয়ে বাদীর ছেলে রাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে বাদী তার ছেলেকে দেখার জন্য ডিবি কার্যালয়ে যান। কিন্তু দুই দিনেও তাকে ছাড়েনি।
এরপর ২৪ মে সকালে বাদী আবারও ছেলেকে ছাড়াতে ডিবি কার্যালয়ে গেলে ওসি আশিকুর রহমান ১০ লাখ টাকা রাতের মধ্যে দিতে হবে- এমনটা দাবি করেন। বাদী টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে রাত পৌনে ২টার সময় পুরোহিত পাড়া রেলওয়ে ভাঙা ওয়াল সংলগ্ন পুকুরপাড় দক্ষিণ পশ্চিম কোনায় রেনু বেগমের বাড়ির পাশে রাজনকে নিয়ে গিয়ে ওসি আশিকুর রহমানের নির্দেশে সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা হত্যার উদ্দেশ্যে বুকে ও পেটের নিচে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এরপর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যায়। তাকে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের হাতে লাশ তুলে দেয়।
মামলার বাদী হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ১০ লাখ টাকা দিতে না পারায় ওসি আশিকুর রহমানসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা আমার ছেলেকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় দায়ীদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য আদালতে অভিযোগ করেছি।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান, এসআই ফারুক আহমেদ, এসআই পরিমল চন্দ্র দাস, এসআই আকরাম হোসেন, এএসআই আব্দুল মজিদ, এএসআই জিন্নাত হাসান মানিক, এএসআই জাকির হোসেন, এএসআই জিল্লুর রহমান, কনস্টেবল কাউসার হাবিব, গোলজার, সোহরাব আলী, সাইফুল, সেলিম, রাশেদুল, সানোয়ার ও জহিরুল ইসলাম।