কাগজ প্রতিবেদক
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যাকবলিত ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়া পরিদর্শন, উদ্ধার কাজ সম্পন্ন ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড এর তত্ত্বাবধানে ৪০৩ ব্যাটেল গ্রুপের অধীনস্ত ইউনিট ২১ ইবি কর্তৃক ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়া উপজেলার মোট ০৯ টি ইউনিয়নের বন্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্য এবং ত্রাণ বিতরণ সম্পাদন করা হয়। গত দুই দিনে ২১ ইবি কর্তৃক সারাদিনব্যাপী উদ্ধার কার্যক্রম অভিযান সম্পন্ন করা হয়েছে। উক্ত উদ্ধার কার্যক্রমে দুইটি উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের অসংখ্য পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী উদ্ধার দল। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমূহের নিকট ত্রাণ পৌঁছানোর কাজ চলমান রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই উদ্ধার কার্যক্রম এবং ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানায়, গত দুদিন ভারি বৃষ্টি না থাকায় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি কোথাও কোথাও উন্নতি হলেও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে অবনতি হয়েছে। সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কংস ও নেতাই নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে এখনো ৩টি ইউনিয়নের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের খামার ও ফসলের মাঠ তলিয়ে থাকায় আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্নস্থানে। ফলে গবাদিপশু, গো-খাদ্য এবং নিজেদের খাবার মহাবিপাকে তারা। ধোবাউড়া উপজেলায় নতুন করে আরো ২৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। টানা পাঁচদিনের পাহাড়ি ঢলের পানিতে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। বাড়িঘরে পানি উঠায় বন্ধ রয়েছে রান্নাবান্না। চরম সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির। কংস নদীর তীরবর্তী আইলাতলী আশ্রয়ন প্রকল্পে পানি ওঠায় দুর্ভোগ গৃহছাড়া বাসিন্দারা।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন জানান, নতুন করে বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যাদুর্গতদের মধ্যে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। আশা করছি দ্রুত এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
ফুলপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ফুলপুর সদর, ছনধরা, বালিয়া ও সিঙ্গেশ্বর এই চারটি ইউনিয়নে নতুন করে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি।
এদিকে হালুয়াঘাট উপজেলায় প্লাবিত ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে সদর, কইচাপুর ও নড়াইল এই ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবার এখনো পানিবন্দি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য এপর্যন্ত ওই দুই উপজেলায় ১০ টন করে চাল ও নগদ এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। যা খুবই অপ্রতুল। তবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এর পক্ষ থেকে শুকনো খাবারসহ খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।