1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  2. my.mensingherkagoj@gmail.com : Editor :
  3. mymensingherkagoj@gmail.com : mkagoj :
  4. ne...ee@gmail.com : news :
  5. kaium.press@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  6. saifulmytv@gmail.com : saiful :
  7. staff@gmm.com : স্টাফ রিপোর্টার : স্টাফ রিপোর্টার
August 15, 2025, 2:06 am
শিরোনাম
ময়মনসিংহ জেলা আইনিট কমান্ড-এর এডহক কমিটি গঠিত ময়মনসিংহে তিতাস গ্যাস ম্যানেজারের দুর্নীতির বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কৃষক কাজিমউদ্দিন হত্যা মামলায় একজনের দশ বছরের কারাদ- নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে ময়মনসিংহে মানববন্ধন ময়মনসিংহে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী র‌্যালি অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ময়মনসিংহে তিতাস গ্যাস কর্মকর্তার দুর্নীতির বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন এনসিসির পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক, বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি’, অধিকতর আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন ময়মনসিংহে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত

তবলিগি গুজব : গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে মুসলিমদের, প্রাণে বাঁচতে ঠাঁই নদীর চরে

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, এপ্রিল ১০, ২০২০,
  • 401 Time View

ছোট ছোট ফুট ফুটে বাচ্চাদের কোলে নিয়ে, হাত ধরে প্রাণ বাঁচাতে সোয়ান নদীর চরে এসে গা ঢাকা দেয় মুসলিম এই পরিবারগুলো। ভারতীয় রাজ্য পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের একেবারে সীমান্ত লাগোয়া এক নদীর তটে। অভিযোগ তাদেরকে গালাগালি, মারধোর করে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরা প্রত্যেকেই হশিয়ারপুর জেলার তালওয়ারা ব্লকের বাসিন্দা। ছোট, ছোট মাটির কুঁড়ে ঘরেই দিন যাপন হত তাদের।

“আমি ওদেরকে (গ্রামের সংখ্যাগুরু হিন্দুদের কথা বলা হচ্ছে) জিজ্ঞেস করি কেন আমাদেরকে মারধোর করছে। ওরা আমাদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বলে আমাদের নাকি, ব্যামো ধরেছে,” সারাজ দীন সংবাদ মাধ্যমকে কথাগুলি জানান।

সে অন্যান্য ক্ষুধার্ত শিশু, মহিলা ও পুরুষদের সঙ্গে এখানে পালিয়ে আসে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে। এদের অনেকেই যৌথ পরিবারের সদস্য। তাদের সকলকে গ্রাম থেকে জোর করে উৎখাত করা হয়েছে।“এমনকি পুলিশও আমাদেরকে পাশের রাজ্য হিমাচলে যেতে দিচ্ছে না। গরম পড়লে আমরা ওদিকে বসবাস করি,” বলেন সারাজ।

তার মায়ের বয়স আশি ছুঁই ছুঁই। গায়ে আগের মত জোর নেই। বয়সের কারণে নানা রোগ-জাড়ি দেহে বাসা বেঁধেছে । কিন্তু ওষুধের জন্য দোকানে গেলে, দোকানদার দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। সারাজের স্ত্রীকে দোকানদার ধমকায়। বলে ” ব্যামো কোথাকার, তোরা মুসলিমরা ভাইরাস ছড়াচ্ছিস”।

সারাজের আর এক জ্ঞাতি ভাই জানায় যে, আশেপাশের গ্রামের লোকজন তাদেরকে নানা ভাবে হেনস্থা, অপমান করতে থাকে। দিল্লিতে তবলীগ জামাতের ঘটনার পর থেকেই এইসব শুরু হয়। ” আমাদের কেউ কোনো দিন দিল্লি শহর চোখেই দেখেনি। কিন্তু, তারপরও এখানকার লোকজন আমাদের জীবন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু করেছে। প্রশাসন ও কোনো সহযোগিতা করছে না,” জানান তিনি।

দুজন তাদের আধার কার্ড দেখিয়ে বলে। এই দুঃসময়ে এগুলো কোনো কাজে লাগছে না। সারাজের পরিবার একা নয়। এখানে তাদের মতো আরো জনা ৮০ ব্যক্তি শিশু, স্ত্রী, সন্তানদেরকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে। এই নির্জন প্রান্তরে আশ্রয় নিয়েছে। প্রত্যেকেই ক্ষুধার্ত। খাবারের জোগাড় নেই। রেশন পায়নি। ঘটনার আগের দিন জরুরি পরিষেবায় ফোন কল করেও কোনো সুরাহা মেলেনি।

সারাজ জানান, না খেতে পেয়ে ছটা বাছুর মারা পড়েছে। ” তিনটে বাছুর কবর দিয়েছি। বাকি তিনটে এখন আমার সামনে মরে পড়ে আছে”, জানান তিনি।

দ্য ওয়্যার এর জনৈক সাংবাদিক হশিয়ারপুরের ডেপুটি কমিশনার অপনিত রাওয়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান যে, হশিয়ারপুরের পুলিশ সুপার ইন্টেন্ডেট গৌরব গর্গকে নির্দেশ দিয়েছি “দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য”।

“আমি আরো অভিযোগ পেয়েছি গতকাল যে কিছু লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তালওয়ার এবং হাজীপুরে গুজজরদেরকে হেনস্থা করে,” এমনটাই জানান পুলিশের এই শীর্ষ আধিকারিক।

ওই এলাকার ডিসি আরো স্বীকার করেছেন যে তার কাছে খবর এসেছে যে ওই নদীর তটে অনেক লোক আটকে আছে। ” আমি মুকেরইন উপজেলা প্রশাসক কে বলেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এবং ওখানে থাকা সমস্ত ক্ষুধার্ত লোকজনকে সাহায্য করতে বলেছি,” জানান তিনি। বুধবার তাদের খাবার পৌঁছানো হয়েছে।

তবে গুজ্জর এই মুসলিম পরিবারগুলোর জন্য একটা বড় সমস্যা হলো তাদেরকে দুধ বিক্রি করতে কোথাও যেতে দেয়া হচ্ছে না।

“আমাদেরকে আশে পাশে কোথাও দুধ বিক্রি করতে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এটাই আমাদের জীবন, জীবিকা। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন, ” জানান সারাজ।

সারাজ এদিন সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে হ্যাঁ তাদেরকে বুধবার সন্ধ্যার দিকে রেশন সামগ্রী – চিনি, আটা দেয়া হয়েছে।

ইংরেজি সংবাদ মাধ্যম দ্য ওয়্যার মঙ্গলবার প্রথম খবরটি প্রকাশ করে। সেদিন তালওয়ারা-মুকেরইন রাস্তার ধারে বসবাসরত দরিদ্র গুজ্জর মুসলিমদের উপর একদল লোক চড়াও হয়, মারধোর করে। সংবাদ মাধ্যমটির দাবি পুলিশ কিছু অপরাধীকে শনাক্ত করা গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। না দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ তরফে যদিও গোটা ঘটনাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়।

সাংবাদিক তরফে যখন জানতে চাওয়া হয় যে, মুসলিমদেরকে আক্রমণ করা, এবং মিথ্যা গুজব ছড়ানোর জন্য কেনো দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, উত্তরে হশিয়ারপুরের এসএসপি গৌরব গর্গ বলেন,”না, আমাদের কাছে তেমন কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি।”

“আম মানুষের মধ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। তাই তারা গুজ্জরদেরকে দুধ বিক্রি করতে দিচ্ছে না,” এসএসপি গর্গ বিষয়কে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেন।

সাংবাদিক যখন পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়েন , কিসের আশঙ্কা, তিনি বলেন, ” আমি কিভাবে বলবো কিসের আশঙ্কা?” যারা এই দুধ বিক্রেতাদের দুধ বিক্রি করতে বাধা দিচ্ছে, পুলিশ কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, দুধ তো অপরিহার্য খাদ্য সামগ্রীর তালিকায় পড়ে, পুলিশ কর্মকর্তা গর্গ এই প্রশ্নের উত্তর ও দিতে ব্যর্থ হন।

উপরন্তু এসএসপি গর্গের বয়ানের সঙ্গে ডেপুটি কমিশনারের বয়ানও কিন্তু মিলছে না। কারণ ডেপুটি কমিশনার দ্য ওয়্যার কে জানায় যে তিনি ওই দিন এবং তার আগের দিন অভিযোগ পেয়েছেন। আর তারপরই তিনি এসএসপিকে “দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছে”।

কেন দরিদ্র এই মুসলিম দুধ বিক্রেতাদেরকে ঘর ছাড়া হতে হয়?

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে। ঠিক ১০ টা নাগাদ। নওশেরা, শিমলী, গড্ডা, বাজিরা, সর্যানা এবং শিবু চক প্রভৃতি এলাকার মন্দির এবং গুরুদুয়ারা থেকে মাইকে একটি বার্তা ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, ” তবলীগ জামাতের সভা থেকে ফেরা মুসলিমরা আমাদের এলাকায় এসে পৌঁছেছে। ওরা করোনা ভাইরাস ছড়াতে এসেছে। প্রতিটি মহল্লাবাসীকে জানানো হচ্ছে আমপনারা জেগে থাকুন, আলো জ্বালিয়ে রাখুন, নিজেদের বাড়ি-ঘর পাহারা দিন।”

ধার্মিন্দর সিং সমাজ কর্মী। নওশেরা শিমলির বাসিন্দা। তিনি জানান, সেদিন আলাদা আলাদা বেশ কয়েকটি গ্রামে এই ঘোষণা করা হয়। তিনি রাস্তায় কিছু যুবক, ছোঁড়াদের দেখেন। তাদের হাতে লাঠি- সোটা, এসব ছিল।
” দু তিন-দিন ধরে এটা চলে,” জানান তিনি।

বুধবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে অনুতাপ প্রকাশ করেন নওশেরা শিমলির সরপঞ্চ দর্শন সিং। তিনি বলেন,” গোটা ঘটনার সূত্রপাত সর্জনা গ্রাম থেকে। ওই গ্রামের সরপঞ্চ রাজন কুমার প্রথম এই ঘোষণা দেন।”

এরপর সর্জনা গ্রামের সরপঞ্চ রাজন কুমারের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। তিনি মাইকের ঘোষণায় তবলীগ জামাত, এমনকি মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। তাহলে কিসের জন্য ঘোষণা দেয়া হয়? তিনি বলেন রাতের অন্ধকারে তিনজন ঘোরাফেরা করছিল। কারা জিজ্ঞেস করতেই ওরা চম্পট দেয়। ” সেদিনের ঘোষণা কেবল মাত্র গ্রামবাসীর নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছিল। সবাইকে আলো জ্বালিয়ে, সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল, এবং বাড়ি-ঘর পাহারা দিতে বলা হয়েছিল,” এমনটাই দাবি।করেন তিনি।

( টিডিএন বাংলায় প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি ইংরেজী সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার থেকে অনূদিত।ওয়্যার এর এই প্রতিবেদনটি লেখেন প্রভজিৎ সিং।)

সূত্র : টিডিএন

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024