জগলুল পাশা রুশো
গত সপ্তাহে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহ জেলায় বন্যায় শুধু শাকসবজি খাতেই ১১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমনসহ পুরো কৃষি খাতে এই ক্ষতির পরিমাণ ৩৫০ কোটি টাকা। এই ক্ষতির প্রভাবে ময়মনসিংহের কাঁচা বাজারে সবজি সরবরাহ কমে যাওয়ার কারনে শাকসবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিনে প্রোটিন ও আমিষের ঘাটতি পূরনকারী পণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে শাকসবজির দাম একই হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে বর্ধিত মূল্যেই তরিতরকারির উপকরণগুলো কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় ময়মনসিংহ জেলায় ৩৫০ হেক্টর জমির শাকসবজি নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতিগ্রস্ত শাকসবজির বাজারমূল্য ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধোবাউড়া উপজেলায় ৩০ হেক্টর, হালুয়াঘাটে ২৫ হেক্টর, ফুলপুরে ৭৫ হেক্টর, গফরগাঁওয়ে ৫০ হেক্টর, মুক্তাগাছায় ৪০ হেক্টর ও সদর উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমির শাকসবজি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
ফুলপুরের সিংহেশ্বরের কৃষক সারোয়ার আলম জানান, বন্যায় পানি দীর্ঘদিন অবস্থান করায় ক্ষেতের শাকসবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। কোনও শাকসবজি অবশিষ্ট নাই। ধোবাউড়ার ঘোষগাঁও গ্রামের কৃষক মো. সালাম জানান, ক্ষেত থেকে পানি এখনও সম্পূর্ণভাবে নেমে যায়নি। নতুন করে সবজি আবাদের আর সময় নেই। আমন ধানের পাশাপাশি সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষকরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সরকার যদি সহজ শর্তে ব্যাংকঋণের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা দেয় তাহলে কৃষকরা ঘুড়ে দাড়াতে পারবে।
শনিবার মহানগরীর মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, সানকিপাড়া এবং কাঠগোলা বাজার ঘুড়ে কাকরোল, মুলা, ঝিঙ্গা, চিচিংগা, শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স ও করলা ১২০ টাকা কেজি, লাউ ৬০-৭০ টাকা পিস, আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচামরিচ কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। পেঁয়াজ জাত ভেদে ৯০ থেকে ১১০ টাকা, আদা ২৮০ ও রসুন ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দামবৃদ্ধির কারন হিসেবে সাম্প্রতিক বন্যা, বৃষ্টিপাত এবং এর প্রভাবে সরবরাহ কমে যাওয়াকে অযুহাত হিসেবে বলছেন স্থানীয় আড়তদার, পাইকার ও বিক্রেতারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. নাসরিন আক্তার বানু বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ এবং বাজারমূল্য নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকার সহায়তা পাঠালে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’ ##