চলতি জুন মাসের ১৩ দিনে করোনায় ২০ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া মোট চিকিৎসক মারা গেছেন ৩৩ জন। শনিবার পর্যন্ত সারা দেশে চিকিৎসক, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টসহ আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ১৬৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী।

করোনায় প্রথম মৃত্যুবরণ করেছেন সিলেট মেডিক্যাল কলেজ মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা: মো: মঈন উদ্দীন আহমেদ। তিনি মারা যান ১৫ এপ্রিল। এপ্রিল মাসে চিকিৎসক মারা গেছেন একজন। তবে মে মাসে মারা গেছেন ১২ জন। করোনায় মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসকদের মধ্যে বেশির ভাগই সিনিয়র চিকিৎসক। তারা কেউ ছিলেন অধ্যাপক, কেউবা কনসালট্যান্ট। তাদের বেশির ভাগই কর্মরত অবস্থায় করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে মারা যান।

৩ মে মারা গেছেন হেমাটোলজিস্ট এবং ল্যাবরেটরি মেডিসিন স্পেশালিস্ট, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক কর্নেল (অব:) ডা: মো: মনিরুজ্জামান। তিনি মারা যান ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। ১১ মে মারা গেছেন নর্দান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: আনিসুর রহমান । তিনি মারা গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ১২ মে মারা গেছেন বিশিষ্ট রেডিওলজিস্ট ইবনে সিনা কনসালটেশন সেন্টার রেডিওলজি বিভাগের প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) ডা: আবুল মোকারিম মো: মোহসিন উদ্দিন। তিনি মারা যান ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। ১৮ মে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ স্বাস্থ্য-১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা: মো: আজিজুর রহমান রাজ। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. এম এ মতিন মারা গেছেন ২২ মে। তিনি মারা গেছেন সিলেটের শামসুদ্দিন হাসপাতালে।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ডা: কাজী দিলরুবা মারা গেছেন ২২ মে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা: এস এম জাফর হোসাইন মারা গেছেন ২৫ মে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৬ মে মারা যান গাইনি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা: আমিনা খান।

এনেস্থে’শিয়া ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা: আব্দুর রহমান মারা গেছেন করোনা উপসর্গ নিয়ে ২৬ মে। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ২৭ মে মারা গেছেন বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক প্রধান ডা: মো: মোশাররফ হোসেন। আর্মি মেডিক্যাল কোরের ক্যাপ্টেন (অব:) ডা: এ এফ এম সাইদুল ইসলাম ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ মে। বিশিষ্ট বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা: ওয়াহিদুজ্জামান আকন্দ বাবলু মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ মে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২ জুন মারা গেছেন ডা: মনজুর রশিদ চৌধুরী। তিনি ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ছিলেন। চট্টগ্রাম মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (মেডিসিন) ডা: এ এস এম এহসানুল করিম মারা যান ৩ জুন।

বারডেমের ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজ মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা: মো: মহিউদ্দিন মারা গেছেন গত ৩ জুন। তিনি মারা যান ঢাকার হলিফ্যামিলি হাসপাতালে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত ইভালুয়েশন অফিসার ডা: কে এম ওয়াহিদুল হক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩ জুন মারা গেছেন। বিশিষ্ট ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: হাবিবুর রহমান কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন ৪ জুন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএমও ডা: মুহিদুল হাসান মারা গেছেন ৪ জুন। বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান এন আই খান মারা গেছেন ৪ জুন। বিশিষ্ট ই্উরোলজিস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা: এস এ এম গোলাম কিবরিয়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন ৪ জুন।

অবসরপ্রাপ্ত ইউএইচ অ্যান্ড এফপিও ডা: এহসানুল কবির চৌধুরী মারা গেছেন ৪ জুন। ডা: সাভার ইপিজেডের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার আবুল কাশেম খান মারা গেছেন ৬ জুন। স্কয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও পরিচালক (মেডিক্যাল সার্ভিস) ডা: মির্জা নাজিম উদ্দিন মারা গেছেন ৭ জুন। বেসরকারি হাসপাতালের ডা: রাজিয়া সুলতানা মারা গেছেন ৮ জুন। এনেসথেশিয়ার কনসালট্যান্ট ডা: সাখাওয়াত হোসেন (ল্যাব এইড হাসপাতাল) মারা গেছেন ৮ জুন। রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা: আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন ৯ জুন।

ইমপালস হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা: জলিলুর রহমান মারা গেছেন ৯ জুন। মেরিস্টোপসের হেড অব কোয়ালিটি, মেটারনিটি বিভাগের ডা: তানজিলা রহমান মারা গেছেন ১০ জুন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা: গাজী জহিরুল হাসান মারা যান ১২ জুন। একই দিনে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: মাহমুদ মনোয়ার, জেড এইচ সিকদার উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: এ কে এম ফজলুল হক, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ডা: আরিফ হাসান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।