কাগজ প্রতিবেদক, গৌরীপুর
ভাজা কালোজিরা, লং, এলাচি, নারিকেলসহ ১৪ প্রকার মসল্লার ভেষজগুণ সম্পন্ন পুরিয়া বিক্রি করে সুখ্যাতি অর্জন করেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের পান দোকানদার আব্দুস সালাম। সোমবার (৭ অক্টোবর) এ ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে হারুন টি হাউজ, জালাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ও ক্রেতাদের আয়োজনে দেয়া হয় ব্যতিক্রমী বর্ণিল সংবর্ধনা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কেককাটা, পার্টি স্প্রে ছিটিয়ে আনন্দ উল্লাস ও উপঢৌকন প্রদান করা হয়। তিনি ২০০৯সন থেকে পৌর শহরের জালাল হোস্টেল এন্ড রেস্টুরেন্টের বারান্দায় এ ব্যবসা করে আসছিলেন।
পান দোকানদার আব্দুস সালাম জানান, আমি পল্ট্রি মুরগীর ব্যবসা শুরু করায় এ ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছি। দীর্ঘদিন অনেকের সঙ্গে ছিলাম তাদেরকে জানিয়েছি আজকেই এ ব্যবসার শেষদিন। সবার নিকট থেকে ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা, পরবর্তী জীবনের জন্য দোয়া চেয়েছি। কিন্তু প্রতিবেশী ব্যবসায়ী ও গ্রাহকরা এমন সংবর্ধনা দিবে কখনও কল্পনা করি নাই। এ ধরণের অনুষ্ঠান তো সরকারি- বেসরকারি অফিসের বড় বড় কর্মকর্তাদের জন্য হয়। আমি সত্যিই অভিভূত, আনন্দিত।
আলোচনা সভায় জালাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক এস এম জলিল বলেন, সালাম ভাই আমার রেস্টুরেন্টের বারান্দার একাংশ ভাড়া নিয়ে পান বিক্রি করতো। পেশা বদল করার কারণে তিনি আজ শেষবারের মতো দোকান খোলেছেন। তার বিদায় অনুষ্ঠান একটু স্মরণীয় করে রাখতেই আমরা কেককাটা, মিষ্টিমুখের আয়োজন করেছি। ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ এমদাদুল হক বলেন, বাজারে অনেক পান দোকান থাকলেও সালাম ভাই ব্যতিক্রম। আমি ১৫ বছর ধরেই তার এখান থেকে পান কিনে খাই। আজকেও শেষবারের মতো পান কিনলাম। তবে সালাম ভাইয়ের হাতের বানানো পান আমরা মিস করবো, আব্দুস সালামকেও মিস করবো। গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, সালাম ভাই পান ব্যবাসায়ী হলেও তিনি এলাকায় ‘পুড়িয়া সালাম’ নামে পরিচিত। কারণ পান বিক্রির পাশাপাশি তিনি বাদাম, নারিকেল, দারুচিনি, লং, বাদাম, কিসমিস সহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে কাগজে মুড়িয়ে বিক্রি করতো। যেটা এখানে পুড়িয়া নামে পরিচিত। ব্যবসা ছেড়ে দেয়ায় আব্দুস সালাম ও পুড়িয়াও মিস করবো।
আলোচনা সভায় অংশ নেন গৌরীপুর উপজেলা স্বজন সমাবেশের সভাপতি মো. এমদাদুল হক, গৌরীপুর গণপাঠাগারের নির্বাহী পরিচালক আমিরুল মোমেনীন, ভুটিয়ারকোনা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ, যুগান্তরের গৌরীপুর প্রতিনিধি রইছ উদ্দিন, হারুন টি হাউজের পরিচালক মো. হারুন মিয়া, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিজন চন্দ্র সরকার, গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান বুরহান, আব্দুর রউফ দুদু, উদীচী গৌরীপুর সংসদের সভাপতি ওবায়দুর রহমান, পৌর স্বজনের সভাপতি শ্যামল ঘোষ, ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল, মাসুদ মিয়া, তাসাদদুল করিম প্রমুখ।