1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  2. my.mensingherkagoj@gmail.com : Editor :
  3. mymensingherkagoj@gmail.com : mkagoj :
  4. ne...ee@gmail.com : news :
  5. kaium.press@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  6. saifulmytv@gmail.com : saiful :
  7. staff@gmm.com : স্টাফ রিপোর্টার : স্টাফ রিপোর্টার
August 14, 2025, 6:00 pm
শিরোনাম
ময়মনসিংহ জেলা আইনিট কমান্ড-এর এডহক কমিটি গঠিত ময়মনসিংহে তিতাস গ্যাস ম্যানেজারের দুর্নীতির বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কৃষক কাজিমউদ্দিন হত্যা মামলায় একজনের দশ বছরের কারাদ- নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে ময়মনসিংহে মানববন্ধন ময়মনসিংহে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী র‌্যালি অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ময়মনসিংহে তিতাস গ্যাস কর্মকর্তার দুর্নীতির বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন এনসিসির পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক, বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি’, অধিকতর আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন ময়মনসিংহে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত

গৌরীপুরের চার রেলপথে ১৪ রেলস্টেশন বন্ধ!

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪,
  • 193 Time View

জনবল সংকট, বাড়ছে জনদুর্ভোগ, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
কাগজ প্রতিবেদক, গৌরীপুর
ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের চার রেলপথের ১৪টি স্টেশনে! এসব স্টেশনে থামে ট্রেন, নামে যাত্রী! নেই বাঁশির হুইসেল, উড়ে না লাল-সবুজ পতাকা। কখনো ট্রেন আসা-যাওয়ার নেই কোনো ঘোষণা, নির্ধারিত সময়ে এলেও ট্রেন বিলম্ব বা বাতিল হওয়ার খবর আসে না এসব স্টেশনে। টিকেট কাউন্টার আছে, টিকেট দেয়ার মাস্টার নেই। বিশ্রামাগার আছে, রক্ষণাবেক্ষণ নেই। স্টেশন মাস্টার সাইনবোড আছে, জনবল নেই। এসব দৃর্শ্যরে দেখা গেলো, ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের চার রেলপথের ১৪টি স্টেশনে! জনবল সংকটে এসব স্টেশনের কার্যক্রম এখন বন্ধ, বেড়েছে যাত্রীদের দুর্ভোগ, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বিনষ্ট হচ্ছে শত কোটি টাকার রেলওয়ের সম্পদ।
ভৈরব, মোহনগঞ্জ, জারিয়া-ঝাঞ্জাইল ও ময়মনসিংহ এ চার রেলপথের জং হলো গৌরীপুর। চারপথে বন্ধ স্টেশনগুলো হলো গৌরীপুর- ভৈরব রেলপথে বোকাইনগর, নান্দাইল রোড, মুশুলী, নীলগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী, জারিয়া রেলপথে পূর্বধলা, ঝালশুকা, মোহনগঞ্জ রেলপথে হিরণপুর, বাংলা, অতিথপুর, চল্লিশানগর, ঠাকুরাকোনা ও ময়মনসিংহ রেলপথের বিসকা স্টেশন। বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেন গৌরীপুর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, জনবল সংকটের কারণেই এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পূর্বধলা স্টেশনে একজন শুধুমাত্র টিকেট বিক্রি করেন।
হেমন্তের শেষবেলায় শীতের কুয়াশাভেদ করে স্টেশনে হাজির হয়েছেন আছিয়া খাতুন, তার স্বামী ইয়াকুব ও দুই পুত্র সোলেমান মিয়া, আইমেন মিয়া। তাদের গন্তব্য ময়মনসিংহ। স্টেশনে তাদের মধ্যে অনেকেই এসেছেন, নানা গন্তব্যের জন্য। ট্রেন কখন আসবে তারা কেউ জানে না! ট্রেন আসবে সেটা জানে; সেই আশায় অপেক্ষা করছেন শিশু-বৃদ্ধ, মাঝবয়সী অর্ধশত মানুষ। রাস্তায় কলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন হোসেন আলী (৬৫)। তার বাড়ি কাকচর গ্রামে। তিনি জানান, ট্রেন তো আসবেই! জারিয়া-মোহনগঞ্জ ট্রেন আছে; একটু দাঁড়ান। স্টেশন প্রসঙ্গে বলেন, টিকেট দেয়ারও লোক নাই, গাড়ির কথা কওয়ারও লোক নাই। স্টেশনে কর্মকর্তাদের ভবনগুলো ও অফিসগুলো নষ্ট হচ্ছে। গজহরপুর গ্রামের খোরশেদ আলম জানান, স্টেশনে লোকজন না থাকায় সব মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা টিকেট করতে পারছে না। উঠছি বিসকা থেকে মোহনগঞ্জের ভাড়া দিতে হচ্ছে মোহনগঞ্জের ট্রেনে উঠে (ট্রেনের ছাড়ার স্থান থেকে চার্জ ধরায়) ময়মনসিংহ গিয়ে, এতে জরিমানা গুনতে হচ্ছে, যাত্রীরা দুর্ভোগ ও অপমানিত হচ্ছেন। তারাকান্দা উপজেলার বিসকা রেলওয়ে স্টেশনের একটি কক্ষ ভাসমান মলমূত্র ত্যাগের কারণে গণল্যাট্টিনে পরিণত হয়েছে। অবশিষ্ট কক্ষগুলোতে ঝুলছে তালা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো অযত্ন-অবহেলা বিনষ্ট হচ্ছে। এ স্টেশনে জারিয়া, মোহনগঞ্জ, ভৈরবগামী ১২টি ট্রেনের যাত্রী উঠানামা করে। আন্তঃনগর হাওর ও আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন অতিক্রমের সময়ও এ স্টেশনে উড়ে না লাল-সবুজের পতাকা। গৌরীপুরের বোকাইনগর রেলস্টেশনের নামটিও ধসে পড়ছে। স্টেশনের কার্যালয়টির সব মালামাল লুট হয়ে গেছে। দাঁড়িয়ে থাকা কঙ্খালসাড় ভবনটিও হারিয়ে যাওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। এ স্টেশনে এখন আর কোনো ট্রেন থামে না। এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক মো. রইছ উদ্দিন বলেন, গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর একটি ঐতিহাসিক এলাকা, জনসাধারণ ও কৃষকপর্যায়ের উন্নয়নের জন্য স্টেশনের কার্যক্রম চালু করা প্রয়োজন। সেই সাথে ময়মনসিংহ-ভৈরব রেলপথে ৪টি লোকাল ট্রেন চালু করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, রেলওয়ে সারাবছর কোটি কোটি টাকার লোকশান গুণে, আবার স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের টিকেট মিলে না। রেলখাতকে সরকারের লাভবান খাত হতে পারে, এ স্টেশনগুলো চালুকরণের মধ্য দিয়ে।
এদিকে ঈশ্বরগঞ্জ রেলস্টেশনের ভবনগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্টেশনে কার্যক্রম না থাকায় নষ্ট হচ্ছে রেলওয়ের মূল্যবান সম্পদ। রেলওয়ে টিম্যান সোলামায়ন এ স্টেশনে সবেদল নীলমণি। তিনিও সবকিছুর দায়িত্ব পালন করছেন। তবে করোনাকালীন দুর্যোগে লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ায় এ স্টেশনে শুধুমাত্র নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস যাত্রা বিরতী করে। এরপরেই রয়েছে সোহাগী রেলস্টেশন। দু’টো স্টেশনেই রয়েছে বুকিং অফিস, যাত্রী ছাউনি. আবাসিক কোয়াটার, স্টেশন মাস্টার অফিস, সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ নানা কার্যালয়। তবে এসব ভবনের তালা খোলারও লোক নেই! সোহাগী স্টেশনে শহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম সুমন ও রাজু মিয়া নামে শুধুমাত্র তিনজন গেইটম্যন রয়েছেন। সোহাগী স্টেশনের কর্মচারী উমেশ চৌহান ও ব্যবসায়ী মানিক মিয়া জানান, স্টেশনটি দেখভাল করার মতো কেউ না থাকায় সিগন্যাল রুমের তারগুলো চুরি হয়ে গেছে। ফলে স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা না থাকায় এ স্টেশনে এখন আর ট্রেন ক্রসিং হয় না। সোহাগীর মো. সুমন ভূইয়া জানান, এ অঞ্চলের সঙ্গে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে রয়েছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক। দেশের ৮০শতাংশ বাঁশের দাড়ি এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়। বিপননে উৎপাদনকারী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে আঠারবাড়ী রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, দু’টো স্টেশনে স্টেশন মাস্টার ও জনবল সংকটের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি উধ্বর্তন মহল অবগত আছেন।
অপরদিকে রঙিন ভবন, সুসজ্জিত স্টেশন হিরণপুর, বাংলা, অতিথপুর, চল্লিশানগর, ঠাকুরাকোনা, ঝালশুকা। ট্রেনের নিয়মিত চলাচল থাকলেও এসব স্টেশনে কোনো জনবল নেই। পূর্বধলা রেলস্টেশনে একজন শুধুমাত্র টিকেট বিক্রি করেন। প্রত্যেকটি ‘ঘ’ ক্যাটাগরি স্টেশনে বুকিং মাস্টার ৩জন, পোর্টারম্যান ১জন, সুইপার ১জন ও ‘গ’ ক্যাটাগরি স্টেশনে স্টেশন মাস্টার ৩জন, পয়েসম্যান ৬জন, পোর্টারম্যান ২জন ও ২জন সুইপারের পদ রয়েছে। তবে এসব স্টেশন ঘুরে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখা মিলেনি। এ প্রসঙ্গে অতিথপুর স্টেশন সংলগ্ন দোকানদার আবু সাঈদ জানান, স্টেশনটি জনবলশূন্যতায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। ট্রেনে যাত্রীরা উঠার পড়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আইনুন আসরাফ সিদ্দিকী রতন জানান, ট্রেন আসবে কখন? এ প্রশ্নের উত্তর স্টেশনে জানার সুযোগ নেই; কখনও দুর্ঘটনা ঘটলেও ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা স্টেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ প্রয়োজন।
এদিকে নান্দাইল রোড রেলওয়ে স্টেশনে দেখা মিলে একদম ভিন্নচিত্র। পরিপাটি রেলওয়ে স্টেশন, তবে জনমানবশূন্য। দু’জন কর্মচারী মাঝেমধ্যে আসলেও এ স্টেশন কার্যত অচল। ভৈরব লোকাল ট্রেন করোনাকালীন দুর্যোগের সময় বাতিল হওয়ার পর এ স্টেশনটি জৌলুস হারায়। স্টেশনের প্লাটফরম প্রত্যেকটি অফিসকক্ষে ঝুলছে তালা। তবে স্টেশনে চারপাশ ও প্লাটফরম অত্যন্ত সুন্দর-গোছানো। এ প্রসঙ্গে নান্দাইল রোডের তোফাজ্জল হোসেন জানান, দু’একজন মাঝে মধ্যে আসেন, তারাই পরিস্কার করে রেখে যান। আর স্টেশনে আগের মতো লোকজনও আসে না। এ প্রসঙ্গে নান্দাইল রোডের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম জানান, এ স্টেশনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নেমে তাড়াইল, নান্দাইল ও ত্রিশালের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ। অথচ স্টেশনটি এখন অচল। অনুরূপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে মুশুলী ও নীলগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনেও। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম গৌরীপুর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বুরহান বলেন, স্টেশনের কোটি কোটি টাকার যন্ত্রাংশ পড়ে আছে। বছরের পর পর এসব মালামাল লুটপাট হচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিয়ে, এগুলো চোরাইপথে বিক্রিতে ব্যস্ত এ বিভাগ। এ সম্পদ সংরক্ষণ করলেও রেলওয়ে অর্ধেক লোকশান কমে যেতো।
এসব স্টেশনে কোটি টাকার সরকারি যন্ত্রপাতি-রেললাইন, স্লিপার, হুক চুরি হয়ে যাচ্ছে। স্টেশনগুলো অচল হওয়ায় রেলপথেও বাড়ছে ঝুঁকি। এ প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজের শিক্ষার্থী হুমাইয়ারা তাবাসসুম শৈলী জানায়, স্টেশনে লোকজন না থাকায়, সন্ধ্যার পরে এসব স্টেশনে অপকর্মের আস্থানায় পরিণত হয়েছে। যাত্রীদের জীবন ও মালামাল নিয়ে উঠানামায়ও ঝুঁকিপূর্ণ। স্টেশনে থাকা জরুরী প্রয়োজনীয় উপকরণও চুরি হয়ে যাচ্ছে। নীলগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী আবুল কাসেম বলেন, জনবল না থাকায় স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসের জিনিসপত্র শুধু নয়, দরজা-জানালাও ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। বাসাবাড়ির স্টেশন এলাকার আমজাদ হোসেন বলেন, যন্ত্রপাতি লুটপাট শেষ, এখন ঘরের টিনগুলোও নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টেশনগুলো চালু হলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। সরকারি সম্পদও রক্ষা পাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024